প্রত্যয় স্পোর্টস ডেস্ক: শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে টিম বাংলাদেশ, তিন টেস্টের সিরিজ দিয়ে করোনা বিরতির পর ফিরবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। শুধু তাই নয়, জাতীয় দলের সঙ্গী হয়ে এইচপি দলেরও শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার কথা। এর প্রধান কারণ দুটো। প্রথমত, শ্রীলঙ্কা এইচপি দলের সঙ্গে সিরিজ রয়েছে তাদের। আর করোনা মহামারির কারণে যেহেতু দেশে ঠিকভাবে অনুশীলন করতে পারেনি টাইগাররা, লঙ্কান বোর্ডও প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য দল দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে, তখন শ্রীলঙ্কায় গিয়ে এই এইচপি দলের সঙ্গে খেলেই প্রস্তুতিপর্বটা সারার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনায় বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা। জাতীয় দল আর এইচপি দলের ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফ মিলিয়ে ৬৫ জনের বহর শ্রীলঙ্কায় পাঠাতে চেয়েছিল বিসিবি। কিন্তু লঙ্কানরা প্রস্তাব পাঠিয়েছে, বহরটা যেন ৩০ জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এর ফলে জাতীয় দলের সফর নিয়ে যেমন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তেমনি ভেস্তে যেতে বসেছে এইচপি দলের সফর।
বাংলাদেশের সফর নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা আর প্রস্তাব বিসিবির কাছে পাঠিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড। সেটা পাওয়ার পর রোববার দুপুরে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান সভায় বসেছিলেন এইচপির চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান, গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন এবং প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর সঙ্গে। সেখানে আলোচনা হয়েছে লঙ্কান বোর্ডের প্রস্তাবের জবাবে বিসিবি কি প্রস্তাব দিতে পারে, তা নিয়ে। আজ আবার সভায় বসবেন বিসিবি কর্তারা, শ্রীলঙ্কাকে কি প্রস্তাব দেওয়া হবে, সেখানেই চূড়ান্ত হবে তা। ধারণা করা হচ্ছে, এইচপি দলের সফর বাতিল করে কেবল জাতীয় দল পাঠানোর প্রস্তাবই দেওয়া হবে। কারণটা পরিষ্কার। জাতীয় দলের সফর এমনিতেই অগ্রাধিকার পাবে। তার ওপর তিন টেস্টের সিরিজটি আবার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সুযোগ বুঝে এইচপি দল শ্রীলঙ্কা সফর করতে পারবে। শ্রীলঙ্কা থেকে ছোট বহর পাঠানোর প্রস্তাব পাওয়ার পর মূলত এমন ভাবনা থেকেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জাতীয় দলের সঙ্গে এইচপি দল পাঠানোর বিষয়টা। এইচপি ইউনিটের প্রধান নাঈমুর রহমান যেমন বলেছেন, ‘অগ্রাধিকার তো পাবে জাতীয় দলের সফর। কারণ এইচপি টিমের যে ক্যাম্প সেটা আমরা এখন করতে পারব, তা পরেও করতে পারব। কিন্তু জাতীয় দলের যে সফর সেখানে কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে। আপনারা জানেন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যাপার আছে। সে ক্ষেত্রে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সঙ্গে যদি আমরা এই উইন্ডোটা মিস করি তাহলে নতুন উইন্ডো বা সøট বের করা কঠিন হবে। সুতরাং জাতীয় দলের টেস্ট সিরিজটা অগ্রাধিকার পাবে।’
অর্থাৎ জাতীয় দলের সফরটা হচ্ছে। কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা নিয়ে ইতোমধ্যেই ঐক্যমতে পৌঁছেছে দুই বোর্ড। তবে জটিলতা আছে আরও কিছু বিষয়ে। নাঈমুর রহমান জানালেন, ‘দুই বোর্ড এখন পর্যন্ত একমত হয়েছে ৭ দিনের কোয়ারেন্টাইন নিয়ে। কিন্তু শ্রীলঙ্কান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বলছে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন। একই সঙ্গে আগে যেটা ছিল কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় আমরা অনুশীলন করতে পারব, কিন্তু এখন সেটাতেও নিষেধাজ্ঞা আসছে। কাজেই আমরা আমাদের অবজারভেশনগুলো তাদের জানাচ্ছি। এটা শ্রীলঙ্কা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে না, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অনেক ব্যাপার আছে। সফরে সদস্য সংখ্যাও কমানোর চিন্তা-ভাবনা করছে। সেটাও একটা ইস্যু। সেখানে আমরা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’
তবে এইচপি দলকে পাঠানোর আশা একেবারে ছেড়ে দিচ্ছেন না নাঈমুর, জাতীয় দল এবং এইচপির এক সঙ্গে শ্রীলঙ্কাতে খেলার পরিকল্পনাতে আছি এখনও। শ্রীলঙ্কা বোর্ড ও আমাদের বোর্ড অনেক ক্ষেত্রে একমত ছিল, সেখানে শ্রীলঙ্কান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিছু অবজারভেশন দিয়েছে। এখন আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণগুলো ওদেরকে দেব। তারপর শ্রীলঙ্কার বোর্ড তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের জানাবে।